আজকের পোস্টে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাবসম্প্রসারণ শেয়ার করব “ নাম মানুষকে বড় করে না, মানুষই নামকে বড় করে“। এই ভাবসম্প্রসারণটি আশা করি তোমাদের পরীক্ষায় কমন আসবে। আমরা এইভাবসম্প্রসারণটি যত সম্ভব সহজ রাখার চেষ্টা করেছি – তোমাদের পড়তে সুবিধা হবে। চলো শুরু করা যাক।
নাম মানুষকে বড় করে না, মানুষই নামকে বড় করে
মূলভাব: মানবজীবনের গৌরব ঘোষিত হয় তার কীর্তিকলাপের মাধ্যমে। তাই মানবজীবনের সুনাম ও মর্যাদা নির্ভর করে তার কর্মের ওপর।
সম্প্রসারিত ভাব : নাম দিয়ে কখনো গৌরব বা সুনাম অর্জন করা যায় না, যদি কর্ম ভালো না হয়। সে কারণে নাম মানুষের প্রধান বিচার্য বিষয় নয়, গুণই মানুষের প্রধান বিচার্য বিষয়। পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ সীমিত সময় নিয়ে আসে। এ নির্দিষ্ট সময়ের মানুষ টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত হয়। এর মধ্যে কিছু মানুষ নিজের ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের জন্যেই জীবনের মূল্যবান সময়টুকু ব্যয় করে। এরা মানুষের হৃদয়ে স্থান লাভ করতে পারে না । আর কিছু মানুষ মানবকল্যাণে তাদের জীবন উৎসর্গ করে থাকেন। তাঁরা পৃথিবীর বুকে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন। এসব মানবকল্যাণকামী ব্যক্তি কর্মের গুণের দ্বারাই তাঁদের নামকে বড় করে তুলেছেন। অনেক মা-বাবা চিন্তা-ভাবনা করে বিখ্যাত ব্যক্তির নামে সন্তানের নাম রাখেন। আশা করেন, নামের গুণে তাঁদের সন্তানেরা বিখ্যাত হবে। কিন্তু আসলে তা হয় না। মহৎ ব্যক্তিরা চরিত্রগুণে, চেষ্টা ও মহৎ কার্য দ্বারা গৌরবান্বিত ও মর্যাদাশীল হয়ে উঠেছেন। স্থান পেয়েছেন ইতিহাসের পাতায়, হয়েছেন স্মরণীয় ও বরণীয়। তেমনি পিতামাতার আশা পূরণ করতে হলে নামের বড়াই না করে শ্রম, নিষ্ঠা ও কর্মগুণে নিজেকে মহৎ করে গড়ে তুলতে হবে। কর্মের গুণেই ব্যক্তির নাম অমর হয়। গোলাপকে যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তার পরিচয় সুগন্ধ বিতরণ করে মানবচিত্তকে মুগ্ধ করার মধ্যে। যুগে যুগে মহৎ প্রাণ ব্যক্তিরা কখনো নিজ স্বার্থকে বড় করে দেখেননি। তাঁরা সমগ্র মানবের কল্যাণ সাধনে নিজেকে নিবেদিত করেছেন । এ ধরনের মহৎ ব্যক্তিরা জীবদ্দশায়ই মানুষের শ্রদ্ধাভক্তি যেমন লাভ করেন, তেমনি মৃত্যুর পরেও যুগ যুগ ধরে মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকেন। অন্যদিকে, এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা অঢেল বিত্ত-বৈভব ও অহংকার নিয়ে পৃথিবীতে কেবল নিজ স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত সময় পার করেন । তারা পৃথিবীতে যেমন সম্মান ও গৌরব অর্জন করতে পারেন না, তেমনি মৃত্যুর পরও বেশিদিন মানুষ তাদেরকে স্মরণে রাখে না। কারণ মানুষের বিচার্য বিষয় তার গুণ ও কর্ম, নাম নয় । যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন— এঁরা সকলেই নামে নয়, মহৎ কর্মগুণে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়েছেন ।
মন্তব্য : মানুষ অমরত্ব লাভ করে কর্মে ও গুণে, নামে নয়। বিখ্যাত ব্যক্তির নাম ধারণ করে বিখ্যাত হওয়া যায় না, যদি না নামধারী ব্যক্তি কর্ম, নিষ্ঠা ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হয়।
সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আমাদের এই পোস্ট থেকে ভাব সম্প্রসারণ যেটি তুমি চাচ্ছিলে সেটি পেয়ে গিয়েছ। যদি তুমি আমাদেরকে কোন কিছু জানতে চাও বা এই ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে যদি তোমার কোনো মতামত থাকে, তাহলে সেটি আমাদের কমেন্টে জানাতে পারো। আজকের পোস্টে এই পর্যন্তই, তুমি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের বাকি পোস্ট গুলো দেখতে পারো।