মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

অনুচ্ছেদঃ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

আজকের পোস্টে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুচ্ছেদ শেয়ার করব “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা“। এই অনুচ্ছেদটি আশা করি তোমাদের পরীক্ষায় কমন আসবে। আমরা এই অনুচ্ছেদটি যত সম্ভব সহজ রাখার চেষ্টা করেছি – তোমাদের পড়তে সুবিধা হবে। চলো শুরু করা যাক।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা । ১৯৭১ সালের ২৫-এ মার্চ মধ্যরাতের পর, অর্থাৎ ২৬-এ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এ যুদ্ধে বাংলার ৩০ লক্ষ লোক শহিদ হয়। পঙ্গুত্ববরণ করে আরও কয়েক লাখ মানুষ। বাঙালির এই আত্মত্যাগের পেছনে ক্রিয়াশীল ছিল একটি মহান চেতনা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে পরিচালনার জন্য যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয় তা এই চেতনা থেকেই উৎসারিত। সংবিধানের ‘প্রস্তাবনা” অংশে বাংলাদেশ পরিচালনার চারটি মূলনীতির কথা বলা হয়েছে। এই মূলনীতিগুলো হলো— জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। অতএব, যেসব আদর্শকে সামনে রেখে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেসব আদর্শের সমষ্টিই হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা । বাঙালি জাতি ভাষাগত ও সংস্কৃতিগতভাবে একক সত্তাবিশিষ্ট একটি জাতি। এই জাতির মধ্যে একটি ঐক্য ও সংহতির ধারণা হৃদয়ে লালন করার নাম বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এই জাতীয়তাবাদী চেতনা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সব বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। অন্যদিকে, গণতন্ত্র একটি রাজনৈতিক অভিব্যক্তি। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস এবং রাষ্ট্রের সকল কর্মপন্থা জনগণের অভিপ্রায়ে নির্ণীত হবে— এমন ব্যবস্থাকে গণতন্ত্র বলে। ১৯৭১ সালে মুক্তিকামী মানুষ এরূপ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-কাঠামোর স্বপ্ন দেখেছিল। আবার, রাষ্ট্রের সকল মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমতা বিধানকে সমাজতন্ত্র বলা যেতে পারে। এরূপ সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে গিয়েছিল। আবার, ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাটি গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র থেকে উৎসারিত। রাষ্ট্রের সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্মপালনে স্বাধীনতা ভোগ করবে এবং একে অন্যের ধর্মকে আঘাত করবে না— এমন আদর্শকে ধর্মনিরপেক্ষতা বলে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বুকে ধারণ করে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল বাঙালি একতাবদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করেছিল। আজকের দিনেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা আমাদের দায়িত্ব একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে এই চেতনা বাতিঘরের মতো দিকনির্দেশনা দিতে পারে।

See also  ভাবসম্প্রসারণঃ পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না

সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আমাদের এই পোস্ট থেকে অনুচ্ছেদ যেটি তুমি চাচ্ছিলে সেটি পেয়ে গিয়েছ। যদি তুমি আমাদেরকে কোন কিছু জানতে চাও বা এই অনুচ্ছেদ নিয়ে যদি তোমার কোনো মতামত থাকে, তাহলে সেটি আমাদের কমেন্টে জানাতে পারো। আজকের পোস্টে এই পর্যন্তই, তুমি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের বাকি পোস্ট গুলো দেখতে পারো।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *